November 25, 2024, 2:11 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
অনেক দিন ধরেই কেইউ প্রায় মানছে না করোনা বিধি। শহর থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে বাড়ি বাড়ি একই অবস্থা। বাস্তবতা দেখে মনে হচ্ছে করোনা নামেরই কোন বস্তু আদৌ ছিল কিনা সন্দেহ। এর ফলাফল হলো গত সপ্তাহ থেকে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। সংক্রমণের হার যেখানে নেমেছিল এক শতাংশের নিচে, তা গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবার ৬ শতাংশের ওপরে উঠে গেছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে জানা গেছে।
এ অবস্থায় করোনা সংক্রমণের চাপ সামাল দিতে করোনা চিকিৎসা করা হাসপাতালগুলোতে বিশেষ শয্যা ও আইসিইউ শয্যা প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দিয়েছে কোভিড সংক্রান্ত সরকারের জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
বুধবার (১৫ জুন) রাতে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সাম্প্রতিক দেশ জুড়ে বেড়ে যাওয়া করোনা পরিস্থিতি প্রতিরোধে ৫টি সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে সাম্প্রতিক দেশে করোনা সংক্রমণের হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য যে বিশেষ শয্যা, আইসিইউ ব্যবস্থা ও জনবল ছিল, তা বর্ধিত হারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য যথাযথভাবে প্রস্তুত রাখার সময় এসেছে।
আরো বলা হয়, বাসার বাইরে সর্বক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, নো মাস্ক নো সার্ভিস নীতি প্রয়োগ করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম বর্জন করা প্রয়োজন। ধর্মীয় প্রার্থনার স্থানগুলো যেমন- মসজিদ, মন্দির, গির্জাতে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক করা দরকার।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনসাধারণকে পুনরায় উদ্বুদ্ধ করতে গণমাধ্যমে অনুরোধ জানাতে হবে বলেও জানানো হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
অপরদিকে, গত কয়েকদিন ধরে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় জনগণকে বার বার করে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘আমরা যেভাবে অসতর্ক হয়ে চলাচল করছি, হাসপাতালে রোগী বাড়তে সময় লাগবে না।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিলাম, কিন্তু দেশে এখন আবার করোনা বাড়ছে। গত এক মাস ধরে দেশে সংক্রমণের হার ছিল দশমিক ৬ শতাংশ, এখন সেটা ৬ শতাংশের ওপরে উঠে গেছে। প্রতিদিন যেখানে দৈনিক ৩০ থেকে ৩৫ জন রোগীর করোনা শনাক্ত হতো, এখন তা ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে। আমরা আশঙ্কা করছি, আমাদের যদি এ মুহূর্তে পরীক্ষা বাড়ে, তাহলে সংক্রমণের সংখ্যাও আরো বেড়ে যাবে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা যেভাবে অসতর্ক হয়ে চলাচল করছি এবং যে হারে প্রতিদিন সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে হাসপাতালে রোগী বাড়তে সময় লাগবে না। তাই স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে আমাদের সকলকে আরো বেশি সতর্ক হতে হবে। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করবেন, এটি আমরা আশা করব।’
প্রতিদিন করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়া এবং এর প্রতিকার বিষয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ফরহাদ মনজুর বলেন, ‘নতুন করে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। সংক্রমণের হার যেখানে এক শতাংশের নিচে ছিল, সেটা গতকাল (শুক্রবার) ৬ শতাংশের ওপরে গিয়েছে। তাই, এখন ঘরের বাইরে বের হলে মাস্ক পরার বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে সরকারকে কঠোর হতে হবে। টিকা নেওয়ার যারা বাকি, দ্রুত টিকা নিতে হবে। যারা প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তারা দ্বিতীয় ডোজ দ্রুত নিন। আর যারা প্রথম, দ্বিতীয় দুটোই নিয়েছেন, তাদেরকে বুস্টার ডোজ নিতে হবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, গত বুধবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৩২ জন, শনাক্তের হার ৩.৮৮ শতাংশ। বৃহস্পতিবার ৩৫৭ জন, ৫.০৭ শতাংশ। শুক্রবার ৪৩৩ জন, ৬.শতাংশ।
শুক্রবার পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৯ লাখ ৫৫ হাজার ৪২৭ জন। শনাক্তের হার ৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের গড় হার ১৩.৭৬ শতাংশ। আর সুস্থতার হার ৯৭.৪৬ শতাংশ। করোনা সংক্রমণের পর থেকে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২৯ হাজার ১৩১ জন। মৃত্যুর হার ১.৪৯ শতাংশ।
Leave a Reply